এ.এম হোবাইব সজীব, চকরিয়া:: টেকনাফের স্টাইলে অবৈধভাবে সমুন্দ্র পথে মানব পাচার থামছেনা কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাগর-নদী বেষ্টীত উপকূলীয় ইউনিয়ন বদরখালী মানব পাচারের এয়ারপোট খ্যাত- নৌ চ্যানেল। উপজেলা জুড়ে ব্যাপক হারে মালয়েশিয়াগামী লোকজনদের নিয়ে কাড়াকাড়ির প্রতিযোগিতা,সংঘর্ষ ও অপহরণসহ বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে বদরখালী উপকূলীয় এলাকা এখন আতংকের জনপদের পরিণত হয়েছে। দালাল সিন্ডিকেটের ও কালো টাকার ছড়াছড়িতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনদের ভূমিকাও প্রশ্ন বিদ্বা হয়েছে। কয়েকজন দালালদের নাম পাওয়া গেলেও সংজ্ঞত কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হল না, আগামীতে তাদের ছবিসহ নাম প্রকাশ করা চেষ্টায় থাকবে।
জানা গেছে, সম্প্রতি মানব পাচার প্রতিরোধের পাশা-পাশি দালালদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের নির্দেশে কাজ শুরু করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায়ে পাচার এবং দালাল সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য কক্সবাজার পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে বিশেষ কমিটি। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই পাচার প্রতিরোধে করনীয় নির্ধারণ করবে সরকার। জেলার অন্যন্য উপজেলার ন্যায় বদরখালীর কয়েকজন চিহ্নিত দালাদের নাম পুলিশ সদর দপ্তর তালিকায় উঠে আসতে পারে বলে নাম প্রকাশে অনি”ুছক একজন কক্সবাজার পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদকে জানান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বল্প খরচে স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে এক শ্রেণীর দালার চক্র দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোক এনে মেশিন চালিত বোটে তুলে দিচ্ছে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে। যাত্রা পথে পুলিশসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেও মাঝে মধ্যে ধরা পড়ছে কিছু যুবক। স্থানিয়রা জানান, কিন্তু প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে সমুন্দ্র পথে মালয়েশিয়ায় গমন ঠেকানো যাচ্ছেনা, উপজেলার উপকুলীয় অঞ্চলের বদরখালী পয়েন্টে। তবে মানব পাচার রোধ করতে চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর,কক্সবাজার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল-চকরিয়া) মোঃ মাসুদ আলম মানব পাচার বন্ধ করতে কঠোর পরিশ্রম করছে বলে এমনও কথা শোনা যাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, দালালদের সাথে পুলিশের অসাধু কিছু কর্মকর্তার অর্থপূণ যোগসাজস থাকায় বলতে গেলে বেপরোয়াভাবে মানব পাচার অব্যাহত রয়েছে এখানে। মালয়েশিয়া মানবপাচারের জন্য সংঘবদ্ধ দালালচক্র চকরিয়াা উপজেলার বদরখালী-মহেশখালী জেটিঘাটকে নৌ-চ্যানেল ব্যবহার করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আটক মালয়েশিয়াগামী যাত্রী, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। স্বল্প খরচে স্বপ্নের মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে এক শ্রেণীর দালালচক্র দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিদেশ গামীদের জড়ো করে এপয়েন্ট দিয়ে ইঞ্জিন চালিত বোটে তুলে দিচ্ছে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে। এতে প্রতিনিয়ত দরিদ্র পরিবারের শত যুবক প্রতারিত হওয়ার পাশা-পাশি আর্থিকভাবে ফতুর হয়ে যাচ্ছে। অনেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছার আগেই থাই নৌ-বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে জেলের ঘানি টানছে। আবার থাইল্যান্ড সীমান্তের গহীণ অরণ্যে মানব পাচারকারী সিন্ডিকেট চক্রের কেউ কেউ অবস্থান করে আগত বাংলাদেশী যুবকদের ধরে নিয়ে ক্রীতদাস হিসেবেও ব্যবহার করছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়াগামী অসংখ্যা বাংলাদেশীকে থাইল্যান্ডের গহীণ অরণ্যে ক্রীতদাস হিসেবেও ব্যবহার করার খবর বেরিয়েছে বিশ্ব মিড়িয়ায়। এরপরেও অভিভাবকেরা সচেতন না হওয়ায় দিন দিন বেপরোয়াভাবে চলছে সমান তালে মানব পাচার। পুলিশ জানান সম্প্রতি মানব পাচারকালে বদরখালী-মহেশখারী নৌ চ্যানেল থেকে অর্ধ ডজন যাত্রী আটক হয়েছে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানিয়েছেন, যারা মানব পাচারে জড়িত রয়েছে তাদের ব্যাপারে পুলিশ সোচ্চার রয়েছে। মানব পাচারে যারা জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সম্প্রতি মানব পাচারের দায়ে পুলিশের পক্ষে থেকে অন্তত অর্ধ ডজন মামলা রুজ করা হয়েছে থানায়। তবে মানব পাচার রোধে পুলিশি অভিযান জোরদার রয়েছে বলে জানান। কক্সবাজার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল-চকরিয়া) মোঃ মাসুদ আলম জানান,যারা মানব পাচার সাথে জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঠকের মতামত